ক্যাম্পানিয়া, ইতালির হারানো স্বপ্নের মতো একটি অঞ্চল, যেখানে প্রকৃতি ও ইতিহাসের মেলবন্ধন এক অনন্য রূপে প্রকাশ পায়। এখানকার বিস্ময়কর উপকূলীয় অঞ্চলগুলো, যেমন আমালফি কোস্ট, সূর্যাস্তের সময় রঙের ঝলকানি নিয়ে আসে, যেন এক স্বপ্নের পৃথিবী। ভেনিসের মতো নয়, ক্যাম্পানিয়া তার নিজস্ব রঙে রঙিন, যেখানে ছোট ছোট গ্রামগুলো পাহাড়ের কোলে বসে আছে, তাদের সেতু ও প্রাচীন দুর্গের ছায়ায়। নেপলসের প্রাণবন্ত বাজারগুলোতে আপনি খুঁজে পাবেন ঐতিহ্যবাহী খাবার, যেমন পিজ্জা, যা বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়, কিন্তু এখানকার স্বাদ যেন অন্য রকম। পম্পেইয়ের ধ্বংসাবশেষে হাঁটতে হাঁটতে আপনি ইতিহাসের গভীরে ডুব দিতে পারবেন, যেখানে প্রাচীন রোমান সভ্যতার ছাপ স্পষ্ট। এছাড়া, ক্যাম্পানিয়ার পাহাড়ের উপর দিয়ে ভ্রমণ করলে চোখে পড়বে সবুজের বিশাল সমারোহ, যেখানে অজস্র লেক ও গাছপালা এক অপরূপ দৃশ্য সৃষ্টি করে। এখানকার স্থানীয় সংস্কৃতি ও উৎসবগুলো জীবন্ত, যেখানে লোকগান, নাচ ও ঐতিহ্যবাহী খাবার এক সাথে মিলেমিশে এক অপূর্ব অনুভূতি সৃষ্টি করে। ক্যাম্পানিয়া শুধুমাত্র দর্শনীয় স্থান নয়, এটি এক ধরনের অনুভূতি, যেখানে আপনি প্রকৃতি, ইতিহাস ও সংস্কৃতির অমিত শক্তির সংমিশ্রণে হারিয়ে যাবেন।
ক্যাম্পানিয়া পর্যটন কেন্দ্র
ক্যাম্পানিয়া পর্যটন কেন্দ্র হলো ইতালির সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং ঐতিহাসিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে অন্যতম, যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক স্থান একসাথে মিলে এক অনন্য অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে। এই অঞ্চলটি মূলত দক্ষিণ ইতালিতে অবস্থিত এবং এর মধ্যে রয়েছে সুন্দর উপকূলীয় শহর, প্রাচীন গ্রাম, এবং মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ। নাপলি, ক্যাম্পানিয়ার রাজধানী, তার বিখ্যাত পিজ্জা এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার জন্য বিশ্ববিখ্যাত। এখানকার রাস্তাঘাট এবং চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য পর্যটকদের জন্য এক অসাধারণ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দেয়। এছাড়াও, পোম্পেই এবং হেরকুলেনিয়াম প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের জন্য বিখ্যাত, যা রোমান সভ্যতার ঐতিহ্যকে ধারণ করে। এই স্থানগুলো ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য অপরিসীম মূল্যবান। অঙ্গুরা, ক্যাম্পানিয়ার আরেকটি জনপ্রিয় শহর, তার সুন্দর সমুদ্র সৈকত এবং চমৎকার জলরঙের খালগুলির জন্য পরিচিত। পর্যটকদের জন্য এই অঞ্চলে বিভিন্ন ধরণের অ্যাকটিভিটি পাওয়া যায়, যেমন হাইকিং, সমুদ্রস্নান, জলক্রীড়া এবং সাংস্কৃতিক সফর। ক্যাম্পানিয়া পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য শুধু তার প্রাকৃতিক দৃশ্য নয়, বরং তার ঐতিহ্য, খাদ্য ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। এখানে আসলে আপনি শুধুমাত্র সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশই পাবেন না, বরং ইতিহাস ও সংস্কৃতির গভীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে যাবেন।
নেপলস পুরোনো শহর
নেপলস পুরোনো শহর, যা সান গ্যাব্রিয়েল কোর্ট নামে পরিচিত, ইটালির ক্যাম্পানিয়া অঞ্চলের অন্যতম ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই এলাকাটি তার প্রাচীন গ cobল্ড এবং পাথুরে অলিগলিগুলির জন্য বিখ্যাত, যেখানে ভ্রমণকারীরা পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে অতীতের স্বাদ পেতে পারেন। নেপলস পুরোনো শহর মূলত মাঝারি যুগের স্থাপত্যশৈলী এবং রাস্তাঘাটের জটিল নকশার জন্য প্রসিদ্ধ, যা একদিকে আধুনিক জীবনের সঙ্গে পুরনো ইতিহাসের অসামান্য সংযোগ সৃষ্টি করে। এখানকার প্রধান আকর্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে পিয়াজ্জা ডেলি মারিয়া, যা মূলত শহরের কেন্দ্রবিন্দু, যেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা এবং পর্যটকেরা একত্রিত হয়ে আনন্দ উপভোগ করেন। পাশাপাশি, নেপলস ক্যাথেড্রাল ও সান্তা কুবা এর মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলি ইতিহাসের গভীরতা অনুভব করতে সহায়ক। এই শহরের খাবার সংস্কৃতি অত্যন্ত সমৃদ্ধ, যেখানে আপনি রগাজ্জিয়া বা পিজ্জা এর মতো আঞ্চলিক বিশেষ খাবার উপভোগ করতে পারেন। পুরোনো শহরের প্রাণবন্ত বাজারগুলি পর্যটকদের জন্য আদর্শ স্থান, যেখানে হাতে তৈরি সামগ্রী, স্থানীয় হস্তশিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার পাওয়া যায়। এই অঞ্চলটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ভ্রমণকারীদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা সরবরাহ করে, যা নেপলসকে সত্যিই আন্তর্জাতিক পর্যটনের অবিচ্ছেদ্য অংশ করে তোলে।
পম্পেই পুরাতাত্ত্বিক স্থান
পম্পেই, ইটালির ক্যাম্পানিয়া অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক শহর, প্রাচীন রোমান সভ্যতার এক অনন্য নিদর্শন। এই শহরটি প্রায় ৭৯ খ্রিষ্টাব্দে ভুসেনো দুর্যোগে ধ্বংস হয়ে যায়, কিন্তু তার অবশেষগুলো আজও মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করে। পম্পেই পুরাতাত্ত্বিক স্থান হিসেবে বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ, কারণ এখানে দেখতে পাওয়া যায় রোমান জীবনের জীবন্ত চিত্র। এই স্থানটি একটি প্রাচীন শহরের মূল স্তূপ, যেখানে সেই সময়ের বাড়ি, বাজার, থিয়েটার, ব্যাবিলনীয় জলপ্রবাহ এবং বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা এখনও অক্ষত অবস্থায় দেখা যায়। ভ্রমণকারীরা এখান থেকে জানতে পারেন রোমানদের জীবনযাত্রা, ধর্ম, শিল্পকলা এবং সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক। বিশেষ করে, অ্যামফিথিয়েটার যেখানে প্রাচীন ক্রীড়া ও বিনোদনের দৃশ্য দেখা যায়, এবং পম্পেইয়ের দেওয়ালচিত্র যা প্রাচীন কলার নিদর্শন হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। এই স্থানটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যাভূমিতে অন্তর্ভুক্ত, যা নিশ্চিত করে এর গুরুত্ব ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা। পম্পেই পরিদর্শন করে, দর্শকরা কেবলমাত্র ইতিহাসের গহীন গভীরতা অনুভব করেন না, বরং তাদের প্রাচীন সভ্যতার জীবন্ত চিত্র দেখতে পান, যা আজও মানুষের কৌতূহল ও বিস্ময় সৃষ্টি করে।
আমালফি কোস্টের সৌন্দর্য
আমালফি কোস্টের সৌন্দর্য অসাধারণ এবং অনন্য। এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক দৃশ্যপট মনোমুগ্ধকর, যেখানে সাগরের নীল জলরাশি এবং পাথুরে পাহাড়ের কোলাজ এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করে। প্রাচীন গ্রামগুলি যেন সময়ের বাইরে চলে গেছে, যেখানে ছোট ছোট ঘরগুলো রঙিন এবং চমৎকারভাবে সাজানো। এই কোস্টের জলরাশির পাশে দাঁড়ালে মনে হয় যেন আপনি এক স্বপ্নের মধ্যে উপস্থিত, যেখানে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের সময় জলরাশি অবারিত রঙে রঙিন হয়ে যায়। অলংকারিত নৌকা, চমৎকার নদীঘাট এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী পাহাড়ের সাথে এই অঞ্চলটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে। স্থানীয় গ্রামগুলির ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যশৈলী এবং সেখানকার জীবনধারা পর্যটকদের মুগ্ধ করে। আমালফি কোস্টের দৃশ্যাবলী প্রতিটি কোণে এক নতুন গল্প বলে, যেখানে আপনি প্রকৃতি ও মানুষের জীবনযাত্রার সম্মিলন দেখতে পাবেন। এখানকার মনোরম পরিবেশ এবং নিরিবিলি পরিবেশ শান্তির জন্য আদর্শ। পর্যটকদের জন্য এই কোস্টের সৌন্দর্য এক অসামান্য উপহার, যা মনকে প্রশান্তি ও আবেগে ভরিয়ে দেয়। ফলে, আমালফি কোস্টের প্রকৃতি এবং সৌন্দর্য যেন একটি চিরন্তন স্মৃতি হয়ে থেকে যায়, যা জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে অনুভব করা যায়।
ক্যাম্পানিয়া কাসল ও দুর্গ
ক্যাম্পানিয়া অঞ্চলের ঐতিহাসিক মহিমা এবং সৌন্দর্য্য অবলোকনে, ক্যাম্পানিয়া কাসল ও দুর্গের গুরুত্ব অপরিসীম। এই অঞ্চলটি প্রাচীন কেল্লা ও দুর্গের জন্য বিখ্যাত, যা পূর্ববর্তী শাসকদের শক্তি ও সভ্যতার সাক্ষ্য বহন করে। ক্যাম্পানিয়া কাসলটি মূলত মধ্যযুগীয় স্থাপনা, যা বলিষ্ঠ প্রাচীর ও টাওয়ার দিয়ে ঘেরা। এই দুর্গটি মূলত পম্পেই ও এর আশেপাশের অঞ্চলের শাসকদের জন্য নির্মিত হয়েছিল, এবং এটি তাদের সামরিক শক্তির প্রতীক। আরেকটি উল্লেখযোগ্য স্থান হলো সান্তা মারিয়া দেল্লা কাস্তা, যেখানে আপনি দেখতে পাবেন প্রাচীন দুর্গের ধ্বংসাবশেষ, যা ইতিহাসের গভীরতা অনুভব করায়। এই দুর্গগুলো শুধু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য নয়, বরং রাজপরিবারের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। ভ্রমণকারীরা এখান থেকে ক্যাম্পানিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য ও ইতিহাসের সংমিশ্রণ উপভোগ করতে পারেন। বিশেষ করে, দুর্গের উপরে উঠলে আপনি পম্পেই, ভেসভিয়াসাস, এবং আশেপাশের মনোরম দৃশ্য দেখতে পাবেন। এই স্থানগুলো পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যেখানে তারা ঐতিহাসিক স্থাপত্যের সৌন্দর্য্য ও ক্যাম্পানিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। কিংবদন্তি ও ইতিহাসের সংমিশ্রণে ভরা এই দুর্গগুলো ক্যাম্পানিয়ার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা প্রতিটি পর্যটকের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
ভেরোনা শহর দর্শন
ভেরোনা শহর দর্শন, কেম্পানিয়া অঞ্চলের এক অপূর্ব রত্ন, ইতিহাস ও সংস্কৃতির এক অনন্য সম্মিলন। এই শহরটি তার সুন্দর নৌকা ভ্রমণ, ঐতিহ্যবাহী অঙ্গন এবং আধুনিক জীবনধারার সমন্বয়ে পর্যটকদের মন জয় করে। রিওনা নদীর পাড়ে অবস্থিত ভেরোনা, এর প্রাচীন কেন্দ্রটি মধ্যযুগীয় স্থাপত্যের চমৎকার নিদর্শন উপস্থাপন করে, যেখানে আপনি দেখতে পাবেন প্রাচীন দুর্গ, চমৎকার প্যালেস ও সরু গলি। শহরের মূল আকর্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম হলো অ্যাগ্রিকা যেখানে প্রাচীন রোমান ধ্বংসাবশেষ ও অট্টালিকা দেখা যায়। এছাড়া, পিয়াজ্জা ব্রা এবং পিয়াজ্জা দেল্লা ভেরোনা শহরের প্রাণকেন্দ্র, যেখানে স্থানীয় মানুষদের জীবনধারা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। ভেরোনার ঐতিহ্যবাহী অ্যাপার্টমেন্ট ও রেস্তোরাঁ গুলিতে আপনি উপভোগ করতে পারবেন স্থানীয় কেম্পানিয়ান খাবার, যা এই অঞ্চলের স্বাদের এক অনন্য স্বীকৃতি। শহরের প্রাচীন স্থাপত্যের পাশাপাশি আধুনিক জীবনধারার মিলনস্থলে, পর্যটকরা এই শহরকে এক অনন্য সাংস্কৃতিক গন্তব্য হিসেবে আবিষ্কার করে থাকেন। ভেরোনার দর্শনীয় স্থানগুলি, ঐতিহ্য, আর তার জীবনধারার সমন্বয়ে এই শহরটি কেম্পানিয়া অঞ্চলের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র। এটা সত্যিই এক বিস্ময়কর শহর, যেখানে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জীবনধারা একত্রিত হয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে।
ক্যাম্পানিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার
ক্যাম্পানিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলি তার ঐতিহাসিক প্রাচীনতা এবং স্বাদের জন্য বিশ্বব্যাপী প্রসিদ্ধ। এই অঞ্চলের খাদ্যসংস্কৃতিতে মূলত ব্যবহৃত হয় তাজা সামুদ্রিক মাছ, স্থানীয় শাকসবজি, এবং সুগন্ধি মসলার সমন্বয়। পিজা ন্যাপোলিটানা, যা নেপোলি শহরের ঐতিহ্যবাহী খাবার, তার পাতলা ক্রাস্ট, টমেটো সস, মজদারী মোৎজারেলা এবং তাজা বাসিলের সংমিশ্রণে তৈরি। এটি শুধু ক্যাম্পানিয়ার নয়, বরং পুরো ইতালির পরিচিত মুখ। এছাড়াও, ল্যাঞ্জা ডি ভিটোলা বা ভিটোলার লাউঞ্জের পাস্তা, যেখানে ভিটোলার সসের সাথে বিভিন্ন ধরনের পাস্তা পরিবেশন হয়, এই অঞ্চলটির পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাবারগুলির মধ্যে অন্যতম। ক্যাম্পানিয়ার আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হলো সালসিচিয়া এস্পেসিয়াল, যা সুস্বাদু সসেজের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষিজ পণ্য এবং মসলার স্বাদ তুলে ধরে। এই অঞ্চলের খাবারগুলি সাধারণত পাতলা, সুগরম এবং স্বাদে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। খাবারগুলি প্রাকৃতিক উপাদানের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়, যা খাদ্যরুচির পাশাপাশি ঐতিহ্যকে জাগিয়ে তোলে। এই সব খাবারগুলি ছাড়াও, ক্যাম্পানিয়ার ঐতিহ্যবাহী পিষ্টক ও মিষ্টি, যেমন সেজেলিয়া এবং রেঞ্জা কন্টা, স্থানীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই খাবারগুলি শুধু যে স্বাদের জন্য নয়, বরং ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি হিসেবেও বিবেচিত। তাই, ক্যাম্পানিয়ার খাবারগুলি ভ্রমণকারীদের জন্য এক অনন্য gastronomic অভিজ্ঞতা প্রদান করে, যা তাদের এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে আরও গভীরভাবে অনুভব করতে সহায়ক।
ক্যাম্পানিয়া প্রাকৃতিক দৃশ্য
ক্যাম্পানিয়া প্রাকৃতিক দৃশ্য একটি অপূর্ব অঞ্চলে পরিণত হয়েছে যেখানে প্রকৃতির সৌন্দর্য চোখে পড়ে। এই অঞ্চলটি তার বিস্ময়কর পাহাড়, উঁচু উপত্যকা এবং সুপ্রশস্ত সমুদ্র সৈকতের জন্য পরিচিত, যা পর্যটকদের মনোমুগ্ধ করে তোলে। অ্যামালফি উপকূলের চমৎকার জলরাশি এবং ঝাঁকুনি দিয়ে ভরা পাথুরে গুহাগুলি ক্যাম্পানিয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। এখানকার পাহাড়ি এলাকা, যেমন অ্যাম্পিলি, সোরেন্তো এবং পম্পেই, তাদের সবুজে ভরা বনভূমি ও উঁচু চূড়ার জন্য বিখ্যাত, যা শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন পর্যটকদের জন্য অপরিহার্য গন্তব্য। এছাড়াও, ক্যাম্পানিয়া এর প্রাকৃতিক দৃশ্যের মধ্যে রয়েছে ভলকানো পর্বত, যা বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির মধ্যে একটি। এই আগ্নেয়গিরির লালগোলাপের মতো লাল অগ্নুকুণ্ড এবং গুহাবিশিষ্ট লেকের দৃশ্য অসাধারণ। নদী ও জলপ্রপাতের মধ্যে দিয়ে ভ্রমণ, যেমন ক্যাম্পানিয়ার চিরন্তন জলপ্রপাত, প্রকৃতির অপূর্ব উপহার। প্রকৃতি প্রেমীদের জন্য এই অঞ্চলটি এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যেখানে তারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে, শান্তির জন্য অপেক্ষা করতে পারে এবং প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে পারে। ক্যাম্পানিয়া প্রাকৃতিক দৃশ্যের এই বৈচিত্র্য এটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর ও আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা করে তোলে।
স্যান জিমিনিয়ানো মঠ
স্যান জিমিনিয়ানো মঠ হলো ক্যাম্পানিয়ার অন্যতম ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক কেন্দ্র, যা তার অসাধারণ স্থাপত্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্য পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়। এই মঠটি মূলত প্রাচীন রোমান ও বৌদ্ধ স্থাপত্যের সংমিশ্রণে নির্মিত, যা দর্শনীয় ও অনন্য। প্রবেশদ্বারে থাকা বিশাল পাথর দরজা এবং চারপাশে বিস্তৃত সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্য মঠের সৌন্দর্যকে আরও বৃদ্ধি করে। ভ্রমণকারীরা এখানে এসে শুধু দেখার জন্য নয়, বরং একটি শান্তিপূর্ণ ধ্যান ও মনোযোগের জন্যও আসেন। মঠের ভিতরে থাকা প্রাচীন মুরাল ও ভাস্কর্যগুলি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে, যা দর্শকদের ইতিহাসের গভীরতা অনুভব করতে সাহায্য করে। এছাড়াও, স্যান জিমিনিয়ানো মঠের আশেপাশে ছোট ছোট রাস্তা ও গাছপালা দিয়ে ঘেরা পরিবেশ পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে। প্রতিদিন অনেক পর্যটক ও ধর্মপ্রাণ মানুষ এখানে আসেন প্রার্থনা করতে এবং শান্তির খোঁজে। কাছাকাছি এলাকায় বিভিন্ন ক্যাফে ও ছোট দোকান রয়েছে, যেখানে স্থানীয় হস্তশিল্প ও খাবার উপভোগ করা যায়। সামগ্রিকভাবে, এই মঠটি ক্যাম্পানিয়ার ঐতিহ্য ও আধ্যাত্মিকতার এক অনন্য চিহ্ন, যা দর্শকদের মনে গভীর ছাপ রেখে যায়। এটি অবশ্যই আপনার ক্যাম্পানিয়া ভ্রমণের সময় অন্তর্ভুক্ত করার মতো একটি স্থান।
ক্যাম্পানিয়ার সংস্কৃতি ও উৎসব
ক্যাম্পানিয়ার সংস্কৃতি ও উৎসব একটি ঐতিহ্যবাহী ও জীবন্ত অংশ যেখানে প্রতিটি কোণায় রয়েছে ইতিহাসের ছোঁয়া এবং লোকসংস্কৃতির উজ্জ্বলতা। এই অঞ্চলের সংস্কৃতি মূলত প্রাচীন রোমান, গ্রিক ও মধ্যযুগীয় ঐতিহ্য দ্বারা প্রভাবিত, যা স্থাপত্য, সংগীত, নৃত্য ও উৎসবে স্পষ্ট। ক্যাম্পানিয়ার মানুষদের জীবনধারায় উৎসবের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে, যেখানে বারো মাসই নানা ধরণের উৎসব ও অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। বিশেষ করে, সান্তা রোজা ও পাস্কা উৎসব এই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব, যেখানে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ছাড়াও লোকসংগীত, নৃত্য ও স্থানীয় খাদ্য উপভোগ করা হয়। সিরাকুস এবং নেপলসের মতো শহরগুলো তাদের ঐতিহ্যবাহী কার্নিভাল ও পারফরম্যান্সের জন্য পরিচিত, যা পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ক্যাম্পানিয়ার উৎসবগুলোতে প্রচুর রঙিন পোশাক, পেটুক মিষ্টি ও ঐতিহ্যবাহী সংগীতের মেলবন্ধন দেখা যায়। এছাড়াও, অ্যাঞ্জেলো অ্যান্ড ডে অ্যাঞ্জেলো, লা ফেঁর্রা ডেল কার্নাভাল ইত্যাদি বড় বড় উৎসবগুলো পর্যটকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এই সব উৎসব ও সংস্কৃতি ক্যাম্পানিয়ার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও জীবনধারার প্রমাণ, যা এখানকার পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে এবং দর্শকদের মনে গভীর ছাপ ফেলে।